মেয়েদের সম্পর্কে একটা প্রচলিত কথা হলো, মেয়েরা বেশী কথা বলে। আসলেই
কি মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় বেশী কথা বলে? বিজ্ঞান এ ব্যাপারে কি বলে?
একজন মেয়ের সাথে আরেকজন মেয়ের দেখা হলে, বা কয়েকজন মেয়ে কোথাও একসাথে হলে বা টেলিফোনে একজন মেয়ে আরেকজন মেয়ের সাথে অনেক সময়ই ছেলেদের তুলনায় বেশী কথা বলে। মূলত এই সব ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে ছেলেরা নিজেদের সাথে মেয়েদের তুলনা করে এই সিদ্ধান্তে এসেছে যে, মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে বেশী কথা বলে। তবে, বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তের সাথে একমত নন। তাদের মতে মোট পরিমানের হিসেবে মেয়েরা আসলেই ছেলেদের চেয়ে বেশী কথা বলে বা বেশী শব্দ ব্যবহার করে কিনা সেটা জানতে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
মেয়েদের নিজেদের মধ্যে বেশী কথা বলার ঘটনাকে বিজ্ঞানীরা ‘ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বেশী কথা বলে’ না বলে বরং ‘ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের কথা বলার প্রবনতা বেশী’ বলে উল্লেখ করেছেন। এর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, মেয়েরা তুলনামূলকভাবে ছেলেদের চেয়ে বেশী সময় ঘরে থাকে। সন্তান লালন-পালন, নিরাপত্তা, আর্থ-সামাজিক এবং ধর্মীয় প্রভাবের কারণে এমনটা ঘটে। এতে করে মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় বৈচিত্র্যময় সঙ্গী এবং সুযোগ কম পায়।
ফলে ক্লাশ রুম, পার্ক বা পার্টির মত জায়গায় মেয়েরা যখন একত্রিত হয়
তখন তারা তাদের মনের জমানো কথার ঝাঁপি খুলে দেয়। অর্থাৎ, মেয়েরা অন্যের
কাছে মনের ভাব প্রকাশ করার সুযোগ কম পায়, যখন সুযোগ পায় তখন ছেলেদের
তুলনায় বেশী কথা বলে। কিন্তু, এর উপর ভিত্তি করেই এটা বলা ঠিক হবে না,
মেয়েরা মোটের উপর ছেলেদের চেয়ে বেশী কথা বলে বা মেয়েরা গড়ে ছেলেদের
চেয়ে বেশী শব্দ ব্যবহার করে।
কথা বলার পরিমাণের ক্ষেত্রে লিঙ্গ পার্থক্যের সুনির্দিষ্ট কোন সিদ্ধান্ত দিতে না পারলেও বিজ্ঞানীরা কথা বলার মানের ক্ষেত্রে লিঙ্গ পার্থ্যকের কিছু কিছু বিষয় আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেছেন, মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় অনেক গুছিয়ে এবং স্পষ্ট করে মনের ভাব কথার মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারে। মনের সূক্ষ্ম এবং জটিল অনুভূতিগুলোও তারা ছেলেদের চেয়ে ভালোভাবে প্রকাশ করতে পারে। যুক্তি উপস্থাপন, বাক্যের বৈচিত্র্য এবং সঠিক সময়ে সঠিক বাক্য প্রকাশের ক্ষেত্রেও মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশী দক্ষ। এর কারণ জানতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করলেন, কথা বলার সময় ছেলেদের মস্তিষ্কের সামনের দিকের একটি নির্দিষ্ট অংশ উদ্দীপ্ত হয়। অন্যদিকে, মেয়েরা যখন কথা বলে তখন তাদের মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট অংশ উদ্দীপ্ত না হয়ে মস্তিষ্কের সামনের দিকের বিস্তৃত অংশ জুড়ে ছাড়াছাড়াভাবে বেশ কিছু অংশ উদ্দীপ্ত হয়। যার মোট পরিমাণ ছেলেদের মস্তিষ্কের উদ্দীপ্ত হওয়া অংশের চেয়ে বেশী।
মস্তিষ্কের এই লিঙ্গ পার্থক্য বিজ্ঞানীরা বিবর্তনবাদ দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন। তাদের মতে আদিম পৃথিবীতে ছেলেদেরকে শিকারের পেছন পেছন অনবরত ছুটতে হত। ফলে তারা কথা বলার কম সুযোগ পেত। অন্যদিকে, মেয়েরা আবাসস্থলে থাকত। তারা সন্তান লালন-পালন করত, ছোট ছোট শিশুদের সাথে শিশুতোষ কথা বলত, গল্প বলত, আবাসস্থলের অন্য মেয়েদের সাথে একসাথে ফল ও অন্যান্য খাদ্য সংগ্রহে যেত, বাসস্থান তৈরি করত, বাসস্থান তৈরি ও খাদ্য সংগ্রহের সময় তারা একে অন্যের সাথে কথা বলত, আলোচনা করত। এতে করে বিবর্তনের ফলে মস্তিষ্কের যে অংশ কথা বলা নিয়ন্ত্রণ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে তা ধীরে ধীরে ছেলেদের চেয়ে উন্নত হয়েছে।
তবে কথা বলার ক্ষেত্রে লিঙ্গ পার্থক্যের সব চেয়ে বড় আবিষ্কারটি হয়েছে অতি সম্প্রতি। আবিষ্কারটি ‘জার্নাল অব নিউরোসায়েন্স’ নামক বিজ্ঞান পত্রিকার ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন, মেয়ে শিশুরা ছেলে শিশুদের চেয়ে আগে কথা বলতে শিখে এবং তারা ছেলেদের চেয়ে দ্রুত কথা বলে। মেয়ে শিশুদের শব্দ ভান্ডার ছেলে শিশুদের চেয়ে সমৃদ্ধ এবং তারা ছেলে শিশুদের চেয়ে অধিকতর বৈচিত্র্যময় বাক্য গঠন করতে পারে। ভাষা শিক্ষা ক্লাসে মেয়ে শিশুদের পারফরমেন্স ছেলে শিশুদের চেয়ে ভালো। মেয়ে শিশুরা যুক্ত বর্ণ বিশ্লেষণেও ছেলে শিশুদের চেয়ে এগিয়ে।
এর কারণ জানতে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুবিজ্ঞান ও মনস্তত্ত্ব গবেষকেরা তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সী দশটি শিশুকে পর্যবেক্ষণ করেন। তারা লক্ষ্য করেন, ছেলে শিশুদের তুলনায় মেয়ে শিশুদের মস্তিষ্কে ফক্সপিটু (FOXP2) নামক প্রোটিন ৩০% বেশী থাকে। ফক্সপিটু-কে বলা হয় ‘ল্যাংগুয়েজ প্রোটিন’। এই প্রোটিনটিই ভাষার উপর দখল ও কথা বলার দক্ষতা নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষক দলের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়টির ‘স্কুল অব মেডিসিন’ বিভাগের হেড ডাঃ মার্গারেট ম্যাককার্থি বলেন, ‘বিশেষ প্রোটিনের উপস্থিতির কারণে প্রাণীর লৈঙ্গিক পার্থক্য বিষয়ক গবেষণা এটিই প্রথম। এতে নারী-পুরুষের মস্তিষ্ক ও আচরণগত ব্যবধানের বিষয়টি আগের তুলনায় স্পষ্ট হয়েছে।’
তবে এই একটি গবেষণাই যে পুরো ব্যাপারটিকে খোলাসা করছে ব্যাপারটি এমন নয়।
ছেলে শিশু এবং মেয়ে শিশুদের উপর গবেষণা করে প্রাপ্ত ফলাফল প্রাপ্তবয়ষ্ক নারী-পুরুষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য কিনা বা কথা বলার ক্ষেত্রে লৈঙ্গিক পার্থক্যের ক্ষেত্রে আর কি কি বিষয় জড়িত তা জানতে আরও গবেষণা প্রয়োজন। গবেষক দলের একজন বিজ্ঞানী Dr. Bowers বলেন, ‘We can’t say that this is the end-all-be-all reasoning.’
এই গবেষণার বরাত দিয়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পত্রিকা, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও ফেসবুকে আরেকটি তথ্য প্রকাশ হয় যা সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সে তথ্যে বলা হয়, ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশী কথা বলে। মেয়েরা গড়ে প্রতিদিন ২০,০০০ টি শব্দ ব্যবহার করে। অন্যদিকে, ছেলেরা গড়ে প্রতিদিন ০৭,০০০ টি শব্দ ব্যবহার করে। কিন্তু, ‘জার্নাল অব নিউরোসায়েন্স’-এ প্রকাশিত গবেষণাপত্রে এ রকম কিছু উল্লেখ করা হয় নি। The Today Show এবং Marie Claire-এর মত মূল ধারার বাইরের কিছু পত্রিকা পাঠকদের মনোরঞ্জনের জন্য নিজেদের মনগড়া এই তথ্য প্রকাশ করে, যা স্পষ্টত হলুদ সাংবাদিকতা। মূলত, এই সব পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকেই এই মিথ্যা তথ্যটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পরে। পরবর্তীতে মূল ধারার বিভিন্ন বিদেশি পত্রিকা এবং ব্লগে The Today Show এবং Marie Claire-এর এই হলুদ সাংবাদিকতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করা হয়।
কথা বলার এবং ভাষার উপর দক্ষতার ব্যাপারে লিঙ্গ পার্থক্যের কারণ খুঁজে বের করতে আরো গবেষণা প্রয়োজন। কথা বলার মানের ব্যাপারে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের দক্ষতা ও দক্ষতার কারণ কিছু ক্ষেত্রে প্রমাণিত হলেও মেয়েরা কথা বলার পরিমানেও ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে কিনা তা বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে জানতে আমাদেরকে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
By : http://tunerpage.com
একজন মেয়ের সাথে আরেকজন মেয়ের দেখা হলে, বা কয়েকজন মেয়ে কোথাও একসাথে হলে বা টেলিফোনে একজন মেয়ে আরেকজন মেয়ের সাথে অনেক সময়ই ছেলেদের তুলনায় বেশী কথা বলে। মূলত এই সব ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে ছেলেরা নিজেদের সাথে মেয়েদের তুলনা করে এই সিদ্ধান্তে এসেছে যে, মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে বেশী কথা বলে। তবে, বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তের সাথে একমত নন। তাদের মতে মোট পরিমানের হিসেবে মেয়েরা আসলেই ছেলেদের চেয়ে বেশী কথা বলে বা বেশী শব্দ ব্যবহার করে কিনা সেটা জানতে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
মেয়েদের নিজেদের মধ্যে বেশী কথা বলার ঘটনাকে বিজ্ঞানীরা ‘ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বেশী কথা বলে’ না বলে বরং ‘ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের কথা বলার প্রবনতা বেশী’ বলে উল্লেখ করেছেন। এর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, মেয়েরা তুলনামূলকভাবে ছেলেদের চেয়ে বেশী সময় ঘরে থাকে। সন্তান লালন-পালন, নিরাপত্তা, আর্থ-সামাজিক এবং ধর্মীয় প্রভাবের কারণে এমনটা ঘটে। এতে করে মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় বৈচিত্র্যময় সঙ্গী এবং সুযোগ কম পায়।
কথা বলার পরিমাণের ক্ষেত্রে লিঙ্গ পার্থক্যের সুনির্দিষ্ট কোন সিদ্ধান্ত দিতে না পারলেও বিজ্ঞানীরা কথা বলার মানের ক্ষেত্রে লিঙ্গ পার্থ্যকের কিছু কিছু বিষয় আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেছেন, মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় অনেক গুছিয়ে এবং স্পষ্ট করে মনের ভাব কথার মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারে। মনের সূক্ষ্ম এবং জটিল অনুভূতিগুলোও তারা ছেলেদের চেয়ে ভালোভাবে প্রকাশ করতে পারে। যুক্তি উপস্থাপন, বাক্যের বৈচিত্র্য এবং সঠিক সময়ে সঠিক বাক্য প্রকাশের ক্ষেত্রেও মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশী দক্ষ। এর কারণ জানতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করলেন, কথা বলার সময় ছেলেদের মস্তিষ্কের সামনের দিকের একটি নির্দিষ্ট অংশ উদ্দীপ্ত হয়। অন্যদিকে, মেয়েরা যখন কথা বলে তখন তাদের মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট অংশ উদ্দীপ্ত না হয়ে মস্তিষ্কের সামনের দিকের বিস্তৃত অংশ জুড়ে ছাড়াছাড়াভাবে বেশ কিছু অংশ উদ্দীপ্ত হয়। যার মোট পরিমাণ ছেলেদের মস্তিষ্কের উদ্দীপ্ত হওয়া অংশের চেয়ে বেশী।
মস্তিষ্কের এই লিঙ্গ পার্থক্য বিজ্ঞানীরা বিবর্তনবাদ দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন। তাদের মতে আদিম পৃথিবীতে ছেলেদেরকে শিকারের পেছন পেছন অনবরত ছুটতে হত। ফলে তারা কথা বলার কম সুযোগ পেত। অন্যদিকে, মেয়েরা আবাসস্থলে থাকত। তারা সন্তান লালন-পালন করত, ছোট ছোট শিশুদের সাথে শিশুতোষ কথা বলত, গল্প বলত, আবাসস্থলের অন্য মেয়েদের সাথে একসাথে ফল ও অন্যান্য খাদ্য সংগ্রহে যেত, বাসস্থান তৈরি করত, বাসস্থান তৈরি ও খাদ্য সংগ্রহের সময় তারা একে অন্যের সাথে কথা বলত, আলোচনা করত। এতে করে বিবর্তনের ফলে মস্তিষ্কের যে অংশ কথা বলা নিয়ন্ত্রণ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে তা ধীরে ধীরে ছেলেদের চেয়ে উন্নত হয়েছে।
তবে কথা বলার ক্ষেত্রে লিঙ্গ পার্থক্যের সব চেয়ে বড় আবিষ্কারটি হয়েছে অতি সম্প্রতি। আবিষ্কারটি ‘জার্নাল অব নিউরোসায়েন্স’ নামক বিজ্ঞান পত্রিকার ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন, মেয়ে শিশুরা ছেলে শিশুদের চেয়ে আগে কথা বলতে শিখে এবং তারা ছেলেদের চেয়ে দ্রুত কথা বলে। মেয়ে শিশুদের শব্দ ভান্ডার ছেলে শিশুদের চেয়ে সমৃদ্ধ এবং তারা ছেলে শিশুদের চেয়ে অধিকতর বৈচিত্র্যময় বাক্য গঠন করতে পারে। ভাষা শিক্ষা ক্লাসে মেয়ে শিশুদের পারফরমেন্স ছেলে শিশুদের চেয়ে ভালো। মেয়ে শিশুরা যুক্ত বর্ণ বিশ্লেষণেও ছেলে শিশুদের চেয়ে এগিয়ে।
এর কারণ জানতে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুবিজ্ঞান ও মনস্তত্ত্ব গবেষকেরা তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সী দশটি শিশুকে পর্যবেক্ষণ করেন। তারা লক্ষ্য করেন, ছেলে শিশুদের তুলনায় মেয়ে শিশুদের মস্তিষ্কে ফক্সপিটু (FOXP2) নামক প্রোটিন ৩০% বেশী থাকে। ফক্সপিটু-কে বলা হয় ‘ল্যাংগুয়েজ প্রোটিন’। এই প্রোটিনটিই ভাষার উপর দখল ও কথা বলার দক্ষতা নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষক দলের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়টির ‘স্কুল অব মেডিসিন’ বিভাগের হেড ডাঃ মার্গারেট ম্যাককার্থি বলেন, ‘বিশেষ প্রোটিনের উপস্থিতির কারণে প্রাণীর লৈঙ্গিক পার্থক্য বিষয়ক গবেষণা এটিই প্রথম। এতে নারী-পুরুষের মস্তিষ্ক ও আচরণগত ব্যবধানের বিষয়টি আগের তুলনায় স্পষ্ট হয়েছে।’
তবে এই একটি গবেষণাই যে পুরো ব্যাপারটিকে খোলাসা করছে ব্যাপারটি এমন নয়।
ছেলে শিশু এবং মেয়ে শিশুদের উপর গবেষণা করে প্রাপ্ত ফলাফল প্রাপ্তবয়ষ্ক নারী-পুরুষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য কিনা বা কথা বলার ক্ষেত্রে লৈঙ্গিক পার্থক্যের ক্ষেত্রে আর কি কি বিষয় জড়িত তা জানতে আরও গবেষণা প্রয়োজন। গবেষক দলের একজন বিজ্ঞানী Dr. Bowers বলেন, ‘We can’t say that this is the end-all-be-all reasoning.’
এই গবেষণার বরাত দিয়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পত্রিকা, নিউজ পোর্টাল, ব্লগ ও ফেসবুকে আরেকটি তথ্য প্রকাশ হয় যা সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সে তথ্যে বলা হয়, ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশী কথা বলে। মেয়েরা গড়ে প্রতিদিন ২০,০০০ টি শব্দ ব্যবহার করে। অন্যদিকে, ছেলেরা গড়ে প্রতিদিন ০৭,০০০ টি শব্দ ব্যবহার করে। কিন্তু, ‘জার্নাল অব নিউরোসায়েন্স’-এ প্রকাশিত গবেষণাপত্রে এ রকম কিছু উল্লেখ করা হয় নি। The Today Show এবং Marie Claire-এর মত মূল ধারার বাইরের কিছু পত্রিকা পাঠকদের মনোরঞ্জনের জন্য নিজেদের মনগড়া এই তথ্য প্রকাশ করে, যা স্পষ্টত হলুদ সাংবাদিকতা। মূলত, এই সব পত্রিকায় প্রকাশিত খবর থেকেই এই মিথ্যা তথ্যটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পরে। পরবর্তীতে মূল ধারার বিভিন্ন বিদেশি পত্রিকা এবং ব্লগে The Today Show এবং Marie Claire-এর এই হলুদ সাংবাদিকতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করা হয়।
কথা বলার এবং ভাষার উপর দক্ষতার ব্যাপারে লিঙ্গ পার্থক্যের কারণ খুঁজে বের করতে আরো গবেষণা প্রয়োজন। কথা বলার মানের ব্যাপারে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের দক্ষতা ও দক্ষতার কারণ কিছু ক্ষেত্রে প্রমাণিত হলেও মেয়েরা কথা বলার পরিমানেও ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে কিনা তা বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে জানতে আমাদেরকে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
By : http://tunerpage.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন